রবিবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৫৮ পূর্বাহ্ন
নিজস্ব প্রতিবেদক : কক্সবাজার-৪ উখিয়া-টেকনাফ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী বর্তমান সংসদ সদস্য শাহীন আক্তার মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে শাহীন আক্তার তাঁর স্বামী সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদিকে সাথে নিয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা ও জেলা প্রশাসক মুহম্মদ শাহিন ইমরানের হাতে মনোনয়ন পত্র জমা দেন। এরপর পরই একই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদিকে নিজের বাবা দাবি করে আদালতে দায়ের করা মামলার বাদী যুবক মোহাম্মদ ইসহাক।
ইসহাক জানিয়েছেন, গত তিন বছর আগে দায়ের যে মামলাটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। তার বাবা একজন সাবেক সংসদ সদস্য ও প্রভাবশালী রাজনৈতিক নেতা। তার সৎ মা শাহীন আক্তার বর্তমান সংসদ সদস্য। তারা উভয়ে প্রভাব খাটানোর কারণে আদালতে মামলাটির দীর্ঘসূত্রিতা হচ্ছে। ফলে তিনি ন্যায় বিচার পাচ্ছেন না। তাই একই আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে জনগণকে এ বিষয়ে সচেতন ও জনমত তৈরি করতে তিনি প্রার্থী হয়েছে। ডিএনএ পরীক্ষা করতে তার দাবি করা পিতৃ পরিচয় নিশ্চিত করতে আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন নি।
তবে সার্বিক বিষয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি কোন কথাই বলেননি। তিনি বলেছেন “নো নীড মিডিয়া”।
আদালত সূত্র জানিয়েছে, গত ২০২১ সালের ১৩ ডিসেম্বর টেকনাফ পৌরসভার কায়ুকখালী পাড়ার ২৭ বছর বয়সী যুবক মোহাম্মদ ইসহাক কক্সবাজার-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদিকে নিজের বাবা দাবি করে টেকনাফের সহকারি জজ আদালতে মামলা দায়ের করেন। মামলায় বদি ছাড়াও মূল-বিবাদী করা হয়েছে বদির আপন চাচা টেকনাফ পৌরসভার মেয়র হাজী মোহাম্মদ ইসলামকে। মামলাটি আদালতে এখনো বিচারাধীন রয়েছে।
মনোনয়নপত্র জমাদানকালে মোহাম্মদ ইসহাক সাংবাদিকদের বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন। নির্বাচনে জয়-পরাজয় কার কাছে মূখ্য নয়, পিতৃত্বের স্বীকৃতি আদায়ের অংশ হিসেবে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। এবারের নির্বাচন তার কাছে পিতৃত্বের স্বীকৃতির সেন্টিমেন্টাল আন্দোলনেরই অংশ। এছাড়া নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণার মাধ্যমে জনগণকে অবহিত করানো যে, তিনি সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান বদি’রই সন্তান।
তিনি জোর দাবি করে বলেন, মামলা স্বাভাবিক গতি-প্রক্রিয়ায় এগোলে তিনি পিতৃত্বের স্বীকৃতি পাবেন। এছাড়া আদালতের আদেশে যদি তার ও বাবা বদির ডিএনএ টেস্ট করা হয় তাহলে অভিযোগের সত্যতা প্রমাণিত হবে।
আদালতে দায়ের করা মামলায় বলা হয়, গত ৩০ বছর আগে টেকনাফ পৌরসভার ইসলামাবাদ ধুমপাড়ার বাসিন্দা আবুল বশরের মেয়ে সুফিয়া খাতুনকে সাবেক সংসদ সদস্য বদি গোপনে বিয়ে করেন। বাদী তার মায়ের পেটে আসার খবর জানতে পেরে তাকে পেটে থাকতে হত্যার চেষ্টা চালান বদি। তাতে সফল না হয়ে সুফিয়াকে স্থানীয় এক রাজ মিস্ত্রীর সাথে বিয়ে দেয়া হয়। এসময় সুফিয়ার পেটে বাচ্চা থাকার কথা গোপন রাখা হয়। পরে জানতে পেরে সেই স্বামী সব মেনে নিয়ে সংসার করেন। এরপরও বাচ্চাসহ সুফিয়াকে হত্যার চেষ্টা করতো বদির পরিবার। এজন্য তারা প্রায় সময় দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পালিয়ে জীবন ধারণ করে। এসব বিষয় উল্লেখ করে সুফিয়া সাংবাদিকদের সাক্ষাৎকারও দিয়েছেন। তাদের দাবি ইসহাক বদির সন্তান, তাকে যেন মেনে নিয়ে সন্তানের মর্যাদা দেয়া হয়। বাদী ও তার মায়ের দাবি অনুসারে আব্দুর রহমান বদির প্রথম সন্তান ইসহাক। তার অবয়ব, আচরণ সবকিছু বদির অবিকল কপি বলে উল্লেখ করেছেন ওয়াকিবহাল মহল।
বিষয়টি নিয়ে কক্সবাজার জেলা দায়ের ও জজ আদালতের পাবলিক প্রসিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম জানান, এ মামলাটি দায়ের করার পর বিবাদীকে নোটিশ প্রদান করা হয়। কিন্তু ঠিকানা জটিলতার কারণে নোটিশটি বিবাদীর হাতে পৌঁছেনি। নোটিশ প্রাপ্তি না হওয়ার কারণে মামলাটি দীর্ঘসূত্রিতা তৈরি হয়েছে।
.coxsbazartimes.com
Leave a Reply